কেশবপুরে “টেকসই আগামীর জন্য, জেন্ডার সমতাই আজ অগ্রগণ্য” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২২ উদ্যাপন উপলক্ষে র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কেশবপুর উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কার্যালয়ের আয়োজনে মঙ্গলবার সকালে উপজেলা পরিষদের মিলনায়তনে ওই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম এম আরাফাত হোসেন এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী রফিকুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা সাদেক চম্পা।
উপজেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা বিমল কুমার কুন্ডুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, কেশবপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি আশরাফ-উজ-জামান খান, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস আর সাঈদ, নিউজ ক্লাবের সভাপতি এম এ রহমান, মাসুদা বেগম বিউটি প্রমূখ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রুপালি রানী।
উল্লেখ্য, লিঙ্গবৈষম্য দূর করতে, নারীদের সম-অধিকারের জন্য সারা বিশ্ব জুড়েই প্রতি বছর ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হয়। শিল্প-সাহিত্য-সহ সব ধরনের ক্ষেত্রে এবং সমাজের সমস্ত কাজে মহিলাদের অবদানকে স্বীকৃতি দিতেই এই দিনটি পালিত হয়।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদ্যাপনের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ইতিহাস। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে মজুরি বৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের রাস্তায় নেমেছিলেন সুতা কারখানার নারী শ্রমিকেরা। সেই মিছিলে চলে সরকার লেঠেল বাহিনীর দমন-পীড়ন। ১৯০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত নারী সমাবেশে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন হয়। ক্লারা ছিলেন জার্মান রাজনীতিবিদ, জার্মান কমিউনিস্ট পার্টির স্থপতিদের একজন। এরপর ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। ১৭টি দেশ থেকে ১০০ জন নারী প্রতিনিধি ওই সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। এ সম্মেলনে ক্লারা প্রতি বৎসর ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দেন।
১৯১১ সাল থেকে নারীদের সম-অধিকার দিবস হিসেবে দিনটি পালিত হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। দিবসটি পালনে এগিয়ে আসে বিভিন্ন দেশের সমাজতন্ত্রীরা। ১৯১৪ সাল থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ৮ মার্চ পালিত হতে লাগল। বাংলাদেশেও ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার লাভের পূর্ব থেকেই এই দিবসটি পালিত হতে শুরু করে। অতঃপর ১৯৭৫ সালে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। দিবসটি পালনের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায় জাতিসংঘ। এরপর থেকে সারা পৃথিবী জুড়েই পালিত হচ্ছে দিনটি নারীর সমঅধিকার আদায়ের প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করার অভীপ্সা নিয়ে। সারা বিশ্বের সকল দেশে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।